রাজশাহী জেলার পুঠিয়ার দর্শনীয় স্থানগুলোর সবই ইতিহাস ঐতিহ্যের স্বাক্ষী। তেমনিই কিছু ঐতিহাসিক স্থানের নাম দেওয়া হলো।
বড় আহ্নিক মন্দির
পুঠিয়া রাজবাড়ির ১০০ মিটার পশ্চিমে পুঠিয়া জমিদার বাড়ীর দিঘী, তার ঠিক পশ্চিম পাশে রয়েছে পাশাপাশি তিনটি মন্দির। এর মধ্যে দক্ষিন দিকের মন্দির টি চরআনী বড় আহ্নিক মন্দির নামে পরিচিত। খ্রিষ্টীয় ১৭/১৮ শতকে নির্মিত সুক্ষ কারুকর্য খচিত মন্দিরের নির্মাণ শৈলী বেশ আকর্ষণীয়। লম্বা আকৃতির এ মন্দিরটিতে রয়েছে তিনটি কক্ষ যার মূল প্রবেশ পথ রয়েছে পূর্বদিকে। এ মন্দিরের মাঝের কক্ষের ছাদ দোচালা বিশিষ্ট এবং দুপাশের কক্ষের ছাদ বর্গাকার ও চার চালা বিশিষ্ট ছাদ দ্বারা আচ্ছাদিত। পোড়া মাটির ফলক দ্বারা প্রতিটা দেওয়াল সজ্জিত।
গোপাল মন্দির
বড় আহ্নিক মন্দিরের পাশে দক্ষিণমূখী অবস্থানে আছে গোপাল মন্দির। ১৬.৩০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০.৪৭ মিটার প্রস্থের এ মন্দিরের উচ্চতা প্রায় ৮ মিটার।
শিব মন্দির
ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক থেকে পুঠিয়া বাজারে প্রবেশ করতে সামান্য দক্ষিণে ঢুকলেই পুঠিয়া রাজবাড়ির প্রবেশপথ। এখানে পুকুর পাড়ে বিশাল আকারের মন্দিরের নাম শিব মন্দির। পুঠিয়ার রাণী ভুবন মোহিনী দেবী ১৮২৩ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। চারদিকে ৬৫ ফুট দীর্ঘ এই শিব মন্দির একটি ৪ ফুট উঁচু ভিতের উপরে নির্মিত, যার প্রধান ফটক রয়েছে দক্ষিন দিকে। চার কোণায় চারটি আর কেন্দ্রে একটি রত্ন বা চূড়া রয়েছে। এর মধ্যে মধ্যের চূড়াটি প্রায় ২০ মিটার উচু। মন্দিরের দোতলায় একটি মাত্র কক্ষ আর চারপাশে দুই স্তরে বারান্দা। মূল কক্ষের ভিতরে আছে কষ্ঠি পাথরের বিশাল এক শিব লিঙ্গ।এশিয়ার অন্যতম বড় শিব মন্দির হিসেবে খ্যাত এই স্থাপনার দেয়াল জুড়ে পৌরাণিক কাহিনী চিত্র খচিত।
দোলমঞ্চ
শিব মন্দির থেকে একটু দক্ষিণে গেলেই চোখে পড়বে চারতলা বিশিষ্ট দোলমন্দির। দোলমঞ্চের আকারে মন্দিরটি ধাপে ধাপে উপরে উঠে গেছে। একদম উপরে আছে গম্বুজাকৃতির চূড়া। প্রত্যেক তলার চারপাশে টানা বারান্দা। ধরা হয় আনুমানিক নির্মাণকাল ঊনবিংশ শতাব্দির শেষ দশকে, নির্মাণ করেছিলেন পুঠিয়ার আরেক রাণী হেমন্ত কুমারী দেবী।
পুঠিয়া রাজবাড়ী কি ভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে সড়ক , রেল এবং আকাশ পথে যাওয়ার সু ব্যবস্থা রয়েছে। ঢাকার গাবতলী, কল্যানপুর থেকে গ্রীন-লাইন, দেশ ট্রাভেল এসি বাস রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় । ভাড়া পড়বে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। এছাড়াও নন এসি বাস যেমন হানিফ, শ্যমলি বাবুল এন্টাপ্রাইজ ছাড়ে যার ভাড়া পড়বে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে।
এছাড়াও রেল পথেও যেতে পারেন রাজশাহী। ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে রবিবার ব্যতীত সপ্তাহে ৬ দিন দুপুর ২.৪০ মিনিটে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়। আর পদ্মা এক্সপ্রেস মঙ্গলবার ব্যতীত বাকী ৬ দিন রাত ১১.১০ মিনিটে ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এসব ট্রেনে ভাড়া পড়বে শোভন চেয়ার ৩৫০ টাকা, স্নিগ্ধা৬১০ টাকা, এসি সিট ৭২৫ টাকাএবং এসি বার্থ ১০৮১ টাকা।
আকাশ পথে রাজশাহী যেতে চাইলে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দ থেকে বাংলাদেশ বিমান কিংবা ইউনাইটেট এয়ারওয়ে বিমানে যেতে পারবেন। ভাড়া পড়বে ৩৫০০ থেকে ৪৫০০ টাকা।
কোথায় থাকবেন:
পুঠিয়ায় রাত্রি যাপনের জন্য জেলা পরিষদের ২ টি ডাকবাংলো রয়েছে। জেলা পরিষদের অনুমতি নিয়ে এবং নির্ধারিত ভাড়া পরিশোদ করে রাত্রী যাপন করা যায়। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ফোন নং: ০১৭২১৭৭৬৩৪৮ । এছাড়াও পুঠিয়া বাসস্ট্যান্টের কাছে আবাসিক হোটেল রয়েছে সেখানেও রাত্রীযাপন করা যাবে।
রাজশাহী শহরে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পারেশনের মোটেলেও থাকতে পারবেন যার ভারা পড়তে পারে ১৯০০ থেকে ৪৬০০ টাকার মধ্যে। চাইলে ঢাকা থেকেও বুকিং দিতে পারেন। ফোন নং : ০২-৮৮৩৩২২৯, ৮৮৩৪৬০০ মোবাইল নং: ০১৭২১৭৭৫২৩৭
কয়েকটি আবাসিক হোটেলের ফোন নং
হোটেল হক্স ইন- ০১৭২১৮১০৪২০
নাইস ইন্টারন্যাশনাল-০১৭২১৭৭৬১৮৮
মুক্তা ইন্টারন্যাশনাল- ০১৭২১৭৭১১০০
শুকরান-০১৭২১৮১১৪৭০