বাই রোড নেপাল ভ্রমন By Road Nepal Tour নেপাল ভ্রমন হতে পারে স্মৃতিময় আনন্দে কাটানো সময়। হিমালয়কন্যা নেপালে ভিসা ছাড়াই ভ্রমন করা যাবে। তবে যদি আপনি বাই রোডে নেপাল যেতে চান সে ক্ষেত্রেপ্রয়োজন পড়বে ভারতের ট্রানজিট ভিসার। নেপালের কাকরভিটা থেকে বাসে করেও নেপালে যাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে বাসে বসে প্রকৃতিক দৃশ্য আরও কাছ থেকে উপভোগ করা যাবে।
হিমালয় কন্যা নেপালে সবসময় পর্যটকদের ভীর লেগেই থাকে। ভ্রমনের জন্য সেখানকার আবহাওয়া এবং পরিবেশ খুবই মানানসই। যদি একা ভ্রমন করতে চান তাহলে ঘুরে আসতে পারেন নেপাল থেকে।
নেপাল ভ্রমনের জন্য খুবই উপযোগী। কি আছে নেপালে? এর সহজেই যে উত্তর মনে আসবে তা হল মাউন্ট এভারেস্ট। চাইলে এর বেজ ক্যাম্প থেকে ঘুরে আসতে পারেন। তবে সে জন্য আপনাকে কমপক্ষে ১০ দিস সময় নিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও শত বছরের পুরনো মন্দির, আকাশচুম্বী পর্বতমালা, জলপ্রপাত, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি, বিভিন্ন উৎসব রয়েছে দেশটিতে। পৃথিবীর যেসব দেশে সহজেই একা ভ্রমণ করা যায়, তার মধ্যে নেপাল অন্যতম।
বিশ্বের পর্বতারোহীদের পছন্দের স্থান নেপাল। অন্নপূর্না কিংবা এভারেস্ট জয়ের জন্য সারা বছরই তারা এখানে ভিড় করেন।
নেপাল পর্বত আরোহীদের কাছে জনপ্রিয় হলেও সাধারন মানুষের কাছে কম জনপ্রিয় নয়। অনেক পর্যটরা নেপালে যান হিমালয়ের পাশ থেকে সূর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে। অন্নপূর্না পর্বতের শুভ্র চূড়া দেখতেও কেউ কেউ ভিড় করেন সেখানে। প্রত্যেক বছর হাজারো পর্যটক ভ্রমণ করেন এই পাহাড়ি কন্যার দেশ নেপালে।
নেপালের কাঠমুন্ডু তে আছে মধ্যযুগীয় শহর যাতে ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি প্রতীয়মান। ডিজনিল্যান্ডের স্বাদ পেতে চাইলে নেপালের থামেল আর পোখরার ট্রেকিংয়ে যেতে পারে।
নেপাল ভ্রমনের উপযুক্ত সময় হল অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস। কারন এ সময় আকাশ পরিস্কার থাকে এর হিমালয়কন্যাও তার সৌন্দার্য্য মেলে ধরে আপন মহিমায়।
কি দেখার আছে নেপাল?
নেপালের মূল আকর্ষণ কাঠমান্ডু, নাগরকোট, পোখারা। কাঠমান্ডু নেপালের রাজধানী সেই সাথে নেপাল ভ্রমণের গেটওয়ে। কাঠমান্ডুতে দেখতে পারবেন বসন্তপুর দরবার স্কয়ার, শম্ভুনাথ মন্দির, পাঠান দরবার স্কয়ার, ভক্তপুর দরবার স্কয়ার, বুদ্ধনাথ মন্দির ইত্যাদি।
নেপালের কাঠমান্ডু শহর থেকে মাত্র ২৮ কিলোমিটার দূরে নাগরকোট। নেপালের যেসব স্থান থেকে সবচেয়ে মনোরম সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়, নাগরকোট তার মধ্যে সবচেয়ে সেরা। হিমালয়ের মোট ১৩টি পর্বত রেঞ্জের মধ্যে ৮টিই নাগরকোট থেকে দেখা যায়।
পোখারা নেপালের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। কাঠমান্ডু থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে। পোখারায় দেখবেন ডেভিড ফলস, গুপ্তেশ্বর গুহা ও শ্বেতী নদী। এ নদীর পানির রং সাদা। বিখ্যাত ফেওয়া লেকে করতে পারেন নৌ-ভ্রমণ। আর সূর্যোদয় দেখতে খুব সকালে যেতে হবে সরংকোট।
কি ভাবে যাবেন নেপালে
সড়কপথে নেপাল যেতে চাইলে ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিতে হবে। তাতে এন্ট্রি এবং এক্সিট পোর্ট দেবেন চ্যাংড়াবান্ধা/ রাণীগঞ্জ। এরপর নেপালে পৌঁছালেই পেয়ে যাবেন অন অ্যারাইভাল ভিসা। এ স্টিকার ভিসা মিলবে এন্ট্রি পোর্টেই। বাসে প্রথমে বুড়িমারি বর্ডারে চলে যেতে হবে সরাসরি। সেখানে ইমিগ্রেশনের যাবতীয় কাজ শেষ করে প্রবেশ করবেন চ্যাংড়াবান্ধায়।
চ্যাংড়াবান্ধায় কাজ করে যেতে হবে রাণীগঞ্জ বর্ডারে। এরপর সেখান থেকে যেতে হবে নেপালের কাঁকড়ভিটায়। শিলিগুড়ি থেকেও বাসে সরাসরি চলে যেতে পারেন কাঁকড়ভিটা। ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে কাঁকড়ভিটা থেকে পাবেন পোখারার বাস। জনপ্রতি ১ হাজার ৫০০ রুপির মতো পড়বে খরচ। সময় লাগবে ১২ ঘণ্টার কিছু বেশি।
এ ছাড়াও সড়ক পথে শ্যামলী ট্রাভেলসের বাস এখন ঢাকা থেকে বাংলাবান্ধা, ফুলবাড়ি, শিলিগুড়ি পার হয়ে ভারতের কাকরভিটা সীমান্ত দিয়ে সরাসরি নেপালের কাঠমন্ডু যায়। এভাবেও যেতে পারবেন।
কেমন খরচ নেপালে
রাজধানী কাঠমান্ডুর দর্শনীয় স্থানগুলো মোটামুটি কাছাকাছি হওয়ায় তেমন খরচ নেই বললেই চলে। এ ছাড়া সার্কভুক্ত দেশের নাগরিকদের জন্য মন্দিরগুলোর টিকেট বিদেশিদের থেকে প্রায় এক তৃতীয়াংশ কম দামে পাওয়া যায়। খাবার পাওয়া যাবে ১৫০-৩০০ রুপির মধ্যে।
নেপালে থাকার জায়গা:
থাকার জন্য থামেল হচ্ছে সবচেয় উপযুক্ত স্থান । কারন থামেলের গলি ঘুপচিতে রয়েছে অসংখ্য হোটেল/ ব্যাকপ্যাকার হোস্টেল। ১০০০ থেকে ১৮০০ রুপির মধ্যে ভাল ডাবল রুমের হোটেল পাওয়া যাবে এখানে। এছাড়াও ৪০০ রুপিতে সিঙ্গেল রুমের হোটেলও রয়েছে। তবে বাজেট একটু বেশি হলে যেমন- ৩ হাজার রুপি বা তার বেশি হলে ডিলাক্স রুমের খাবারসহ অনেক ভালো হোটেল পাওয়া যায়। তবে থামেলের হোটেলগুলো আগে থেকে বুকিং না দিয়ে বরং কয়েকটি হোটেল ঘুরে যাচাই-বাছাই করলে সস্তায় ভালো হোটেল পাওয়া সম্ভব।
হিমালয় কন্য নেপাল একটি ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্বৃদ্ধ দেশ। এমনকি ইয়াতির রহস্যঘেরা দেশ ও নেপাল। মাউন্ট এভারেস্ট এর কারনে বিশ্বের কাছে আকর্ষনীয় দেশ নেপাল।