পদ্মা নদীতে ভাসমান রেস্টুরেন্ট করাটা মোটেও সহজ কাজ নয়। আজ আমরা জানবো স্রোতশীনী এই পদ্মার উপর গড়ে তোলা ড্রিম পদ্মা ভাসমান রেস্টুরেন্ট ও পদ্মা বাড়ি ভাসমান রেস্টুরেন্ট সর্ম্পকে। নদীমার্তৃক এই বাংলাদেশে বৈচিত্রের যেন কোন শেষ নেই। ছোট্ট এই দেশের প্রতিটি কোনে ইউরোপ আমেরিকার মত চাকচিক্যময় জীবনের চিত্র না দেখা গেলেও এখানে আছে সহজ সরল মানুষের খেটে খাওয়া জীবনের বৈচিত্রময় গল্প।
বাংলাদেশ ভুখন্ডের উপর বয়ে যাওয়া প্রধান নদী এই পদ্মা। পদ্মা বাংলাদেশের ২য় দীর্ঘতম নদী। স্রোতশীনি পদ্মার শুরটা রয়েছে ভারতের হিমালয় পর্বোতমালার গঙোত্রী হিমবাহ থেকে। ভারতের গঙ্গা নদী রাজশাহী অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে নাম পাল্টে হয়ে যায় পদ্মা নদী।
বিখ্যাত উপন্যাসিতক মানিক বন্ধোপাধ্যায় এর পদ্দা নদীর মাঝি উপন্যাসে ফুটে ওঠে পদ্মা পাড়ের মানুষের জীবন চিত্র। প্রতি বছর নদী ভাঙ্গনের শিকার হয় পদ্মা পাড়ের এই মানুষগুলো। বিলীন হয়ে যায় ঘড়, বাড়ি আর বেচে থাকার শেষ আশ্রয় টাও।
সুপ্রিয় দর্শক, পদ্মার মত এমন ভয়ঙ্কর নদীর উপরে তৈরী হয়েছে বেশ কয়েকটি ভাসমান রেস্টুরেন্ট। ব্যাপারটি তাই কৌতুহল নিয়ে দেখবার জন্য ঢাকা থেকে ছুটে চলছি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর ইউনিয়ন এর আন্ধারমানিক নামক গ্রামে। বর্তমানে এখানে রয়েছে দুইটি ভাসমান রেস্টুরেন্ট একটি হলো ড্রীম পদ্মা ভাসমান রেস্টুরেন্ঠ। আর অন্যটি পদ্মাবাড়ি ভাসমান রেস্টুরেন্ট।
পদ্মার মত এমন স্রোতশীনি নদীতে ভাসমান রেস্টুরেন্ট তৈরি করাটা বেশ চ্যালেঙ্জিং একটি কাজ। যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের ডেউ বা জলোচ্ছাস নিমিষেই ধ্বংস করে দিতে পারে এই ভাসমান বা ফ্লেয়েটিং রেস্টুরেন্ট গুলোকে। এত কিছু জানার পরও যারা এই উদ্যোগ নিয়েছে তাদের প্রশংসা করতেই হবে।
রাস্তার দুই পাশে সাড়ি সাড়ি গাছ আর খাল বিল নদী দেখতে দেখতে মনে এক অন্য রকম প্রশান্তি অনুভাব করলাম। করোনায় লকডাউনে কঠোর বিধিনিষেধ শেষে যেন একটু খানি হাপ ছেড়ে বাচলাম। তাই স্বাস্থবিধি মেনে মাস্ক ব্যবহার করে সর্তক ভাবেই করেছি আমাদের এবারের যাত্রা।
হরিরামপুর তিন রাস্তার মোড়ে এসে সুজন চন্দ্র শলি এর মিস্টির দোকানে এসে গরম গরম মিস্টি আর কালোজাম খেলাম। স্বাদটা পুরোটা সময় জুরে মুখে লেগে ছিল। আপনিও এসে চেখে দেখতে পারেন।
গ্রামের পর গ্রাম পেড়িয়ে রাস্তার দু পাশের দৃম্য দেখতে দেখতে প্রায় ৭০ কিলোমিটার কাচা পাকা রাস্তা পেড়িয়ে অবশেষে পৌছে গেলাম আন্ধারমানিক গ্রামে।
বান্দরবানের কিন্তু আন্ধারমানিক নামে একটি যায়গা রয়েছে। ইনশাহআল্লাহ সবকিছু ঠিক তাকলে বান্দরবানের সেই আন্ধারমানিকও অবশ্যই যাবো।
নদী পাড়ে এসেই কিছুটা মন খারাপ হয়ে গেলা। নদীর তীড় পদ্মার ভাঙ্গনে ক্ষত বিক্ষত।
আর সামনেই দেখা যাচ্ছে ভাসমান রেস্টুরেন্টটি।
এটি ড্রিম পদ্মা ভাসমান রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্ট টি পায় ১৫০ টি ড্রাম দিয়ে নদীতে ভাসমান করা হয়েছে। রেস্টুরেন্ট এর ৪ কোন দড়ি দিয়ে বাধা রয়েছে। নদীর পানি ওঠা নামার সাথে সাথে রেস্টুরেন্টটিও তার অবস্থান পরিবর্তন করে।
করোনায় কারনে রেস্টুরেন্ট দুইটি বন্ধ ছিল অনেকদিন। তাই সঠিক পরিচর্যা করা হয়নি। আর ক্রেতাও ছিল না তেমন। তবে বিক্রেতা জানান করোনা না তাকলে প্রায় প্রতিদিনই ঢাকা সহ আশে পাশের জেলা তেকে মানুষে বেড়াতে আসেন এই রেস্টুরেন্ট দুইটি দেখতে।
রেস্টুরেস্ট এর রয়েছে চাইনজ ও থাই মেন্যু। দাম ও খুব একটা বেশিনা। ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় দুইজন ভরপেট খেতে পারবেন। এখানে।
নদীর তীর থেকে কিচুক্ষন পর পর জেলেদের ব্যাস্ততা চোখে পড়ে। জাল তোলা, জাল ফেলা।, নদী থেকে মাছ ধরে এনে আড়তে দেওয়া সবই নিত্যদিনের কাজ। সকাল বেলা এই ঘাটে আসলে কিনতে পারবেন নান প্রজাতীর ছোট বড় পদ্মার টাটকা মাছ।
পদ্মার ছোট মাছের স্বাদ যে না খেয়েছে তাকে বোঝানো কঠিন।
পদ্মা পাড়ের এই যায়টিতে রয়েছে আর ও একটি রেস্টুরেন্ট নাম পদ্মা বাড়ি ভাসমান রেস্টুরেন্ট। মুলত এই নতুন রেস্টুরেন্ট টি ড্রিম পদ্মা ভাসমান রেস্টুরেন্ট থেকে ও বড় আর বেশ গোছানো। আর নির্মানটিও বেশ মজবুত।
আমরা আমাদের দুপুরের কাবার টি এই রেস্টুরেন্ট এ সেড়ে ফেললাম। চিকেন ফ্রাইড রাইস দিয়ে সেরে ফেললাম আমাদের দুপুরের খাবার। নদীর উপর বসে খাবার খাওয়াটা এক অন্য রকম অনুভুতি দিবে আপনার মনে। মোট কথা আমরা জার্নিটা বেশ ইনজয় করেছি। আপনাদের ও আসা করি খারাপ লাগবে না।
ঢাকা থেকে মানিকগহ্জের হরিরামপুর এ বাস পাওয়া যায়। গুলিস্তান থেকে পেয়ে যাবেন। হরিরামপুর থেকে াটে তে করে চলে আসতে পারবেন আন্দারমানিক ঘাট।