ছেড়া দ্বীপ বা ছেড়াদিয়া দ্বীপ (Chera Dwip) বাংলাদেশের মুল ভুখন্ড পেড়িয়ে বঙ্গোপসাগরেরে বুকে জেগে ওঠা বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমাটিন থেকে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ছোট আকারের দ্বীপ। সেন্টমাটিন দ্বীপের তীর ঘেষে জেগে উঠা এই সব ছোট আকারের দ্বীপে গত কয়েক দশকে পর্যটকদের আনাগোনা এতটাই বেড়েছে যে এই ছোট্ট দ্বীপ তার ভারসাম্য ধরে রাখতে রিতীমত যুদ্ধ করে যাচ্চে। আমারা প্রায় প্রত্যেকেই এইসব দ্বীপে ঘুড়তে গেলে প্রকৃতি আর দ্বীপের প্রতি এতটাই নির্দয় আচরন করি যার বলার ভাষা নেই। স্বার্থপরের মত এই দ্বীপটার সৌন্দর্য্য নিজের মত করি উপভোক করি ঠিকই কিন্তু সেই সাথে আমাদের অমানবিক আচরনের প্রকাশ ঘটাতেও বিন্দু মাত্র পিছপা হইনা। দ্বীপে গিয়ে দ্বীপের পরিবেশ নোংড়া করতে যা যা করা প্রয়োজন আদতে আমরা এই সব কিছু করে তাকি। প্লাসটি, পলিথিনজাত প্যাকেট ইত্যাদি সাগরের পানিতে ফেলা। উচ্চ স্বরে মাইক বাজিয়ে ইন্জিন চালিত বোট, নৌকা, স্পীডবোট ভাড়া করে দলবেধে দ্বীপে ঘুড়তে গিয়ে সমুদ্রের তীরকে ক্রমেই করে তুলছি বিষাক্ত। তবে সরকার দেরীতে হলে সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যাি আমরা সবাই মেনে চলতে পারলে কিছুটা হলেও দ্বীপেরে পরিবেশগত ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বেশ কিছু নিদের্শনা দিয়েছে সেগুলো হলো:
১. দ্বীপের সৈকতে সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকশা, ভ্যানসহ কোনো ধরনের যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক বাহন চালানো যাবে না
২. দ্বীপের সৈকত, সমুদ্র এবং নাফ নদীতে প্লাস্টিক বা কোনো ধরনের বর্জ্য ফেলা যাবে না
৩. পশ্চিম দিকের সৈকতে কোনাপাড়ার পর দক্ষিণ দিকে এবং পূর্ব দিকের সৈকতে গলাচিপার পর দক্ষিণ দিকে যাওয়া যাবে না
৪. দ্বীপের চারপাশে নৌ-ভ্রমণ করা যাবে না
৫. জোয়ার-ভাটা এলাকায় পাথরের ওপর দিয়ে হাঁটা যাবে না
৬. সামুদ্রিক কাছিমের ডিম পাড়ার স্থানে চলাফেরা, রাতে আলো জ্বালানো এবং ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করে ছবি তোলা যাবে না
৭. সৈকতে রাতের বেলা কোনো ধরনের আলো বা আগুন জ্বালানো, আতশবাজি ও ফানুস ওড়ানো যাবে না
৮. সৈকতে মাইক বাজানো, হইচই এবং উচ্চস্বরে গান-বাজনা করা কিংবা বারবিকিউ পার্টি করা যাবে না
৯. ছেঁড়াদিয়া দ্বীপে স্পিডবোট, কান্ট্রি বোট, ট্রলার কিংবা অন্যান্য জলযানে যাতায়াত কিংবা নোঙর করা যাবে না
১০. সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে সরকারের অধিগ্রহণ করা ছেঁড়াদিয়া দ্বীপ ভ্রমণ করা যাবে না
১১. প্রবাল, শামুক, ঝিনুক, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, তারা মাছ, রাজকাঁকড়া, সামুদ্রিক ঘাস, সামুদ্রিক শৈবাল এবং কেয়া ফল সংগ্রহ ও ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না
১২. জাহাজ থেকে পাখিকে চিপস বা অন্য কোনো খাবার খাওয়ানো যাবে না
১৩. দ্বীপে সুপেয় পানির পরিমাণ সীমিত হওয়ায় পানির অপচয় রোধ করতে হবে
উপরোক্ত নিদের্শনা গুলো যে কোন মুল্যে আমাদের সকলকে পালন করতে হবে। দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে শপথ নিন উপরোক্ত নিয়ম গুলো মেনে চলে এই দ্বীপে ভ্রমনে বের হবেন।