গোলাপ গ্রাম ঢাকার কাছে সভারের বিরুলিয়া ইউনেয়নে সাদুল্লাপুর গ্রামে অবস্থিত। পুরো গ্রামই জুড়েই আছে গোলাপ বাগান তাই লোক মুখে প্রচালিত হয়েছে গোলাপ গ্রাম নামে। এ গ্রমে শুধু গোরাপ বাগানই নয় আছে আরও নানান জাতের ফুলের বাগান। তার মধ্যে জারভারা , গ্লাডিয়াস, রজনীগন্ধা ইত্যাদি অন্যতম। সাদুল্লাপুরের গোলাপ সহ জারভারা , গ্লাডিয়াস, রজনীগন্ধা ঢাকার শাহবাগ সহ সারাদেশের ফূলের বাজারে বেশ বড় পরিসরে যোগান দিয়ে থাকে।
শহরের ক্লান্তি থেকে একটু অবসাদ পেতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন গোলাপ গ্রাম থেকে। গ্রামের আকা বাকা পথ ,গোলাপের মিস্টি গন্ধ আর তুরাগ নদীর শান্ত বাতাস আপনার মনকে মোহিত করতে বাধ্য। ঢাকা থেকে একদিনের পরিকল্পনায় ঘুরে আসতে পারেন গোলাপ গ্রাম থেকে। একটি সকাল কিংবা একটি বিকেল কাটিয়ে আসতে পারেন গোলাপের রাজ্য থেকে।
ফুলের রানী গোলাপের অপার সৌন্দয্য হরন করতে চাইলে আপনাকে যেতে হবে শীতকালে। মুলত শীতকালে ফুটান্ত গোলাপের সমারহ অন্যান্য ঋতু থেকে বেশি দেখা যায়। তবে বছরের অন্য সময় নিরাস হবার কিছু নেই কারন জারভারা , গ্লাডিয়াস, রজনীগন্ধা সারা বছর জুড়েই থাকে। যেহেতু শীতকালে গোলাপ ফোটে তাই পুরো গ্রামকে মায়াবী করে তোলে এই শীতকালে।
স্থানীয় ফুল চাষীদের উদ্যোগে প্রতি সন্ধায় শ্যামপুর গ্রামে আবুল কাশেম মার্কেটের সামনে বসে গোলাপের হাট। সারা দেশ থেকে ফুল ব্যবসায়ীরা ফুল কিনে চলেযায় আপনালয়ে।
মুলত মিরিন্ডা জাতের গোলাপের চাষ বেশি হয় এখানে। লাল, হলুদ, গোলাপি, সাদা নানা রঙের গোলাপের সমরাহ এখানে। দেখতে দেখতে চোখ জুড়িয়ে যায়। চাইলে খুব কম দামে গোলাপ কেনাও যায়। চাষীরা সাধারনত ক্ষেতে ঢুকতে দিতে চায় না তবে ফুল কিনলে কিছুটা নমনীয় আচরন করে।
খাবার
গোলাপ গ্রামে ঘুরতে গেলে নিজ উদ্যোগে খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। বাগানের আশেপাশে কোন হোটেল বা রেস্টুরেন্ট নেই তাই নিজ উদ্যোগে খাবার ব্যবস্থা করতে হবে।
কি ভাবে যাবেন:
১. উত্তরা থেকে গোলাপ গ্রাম:
উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকায় নর্থ টাওয়ারের কাছ থেকে লেগুনায় করে সোনারগাঁও রোড ধরে দিয়াবাড়ি আসতে হবে। এরপর সামনে এগিয়ে মেইন রোড়ে লোকাল বাসে করে বিরুলিয়া ব্রিজে পৌছাতে হবে । বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে ২০ টাকা অটোভাড়া দিয়ে পৌছে যাবেন সাদুল্লাপুর। চাইলে বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে ৫০০ টাকায় নৌকা রির্জাভ করে পৌছতে পারেন সাদুল্লাপুর। একটা নৌকায় ২৫ জনরে মত বসা যায়।
২. টঙ্গী থেকে গোলাপ গ্রাম:
টঙ্গীস্টেশন থেকে কামারপাড়া হয়ে সি এন জি রিজার্ভ নিয়েপৌছাতে হবে বিরুলিয়া ব্রিজ । ভাড়া পড়বে ২০০ টাকা করে। বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে অটোতে ১০ ভাড়া দিয়ে পৌছে যাবেন আরকান বাজার, সেখান থেকে আবার ১০ টাকা ভাড়া দিয়ে পৌছে যাবেন সাদুল্লাপুর।
৩. যাত্রবাড়ী থেকে গোলাপ গ্রাম:
যাত্রাবাড়ী , গুলিস্তান, ফার্মগেট হয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধে পৌছাতে হবে। এছাড়া মিরপুর ১ নম্বর সেকশন অথবা মিরপুর ১০ নম্বর থেকে কিংবা গাবতলী থেকে সহজেই রিক্সয় দিয়াবাড়ী বটতলা ঘাটে পৌছান যায়। এছাড়াও দিয়াবাড়ী বটতলা ঘাটে সিএনজি, অটোরিক্সা কিংবা ট্রাক্সিক্যাবেও যাওয়া যায়। তারপর এখান থেকে শ্যালো ইঞ্জিনের নৌকায় সাদুল্লাপুর পৌছাতে হবে। প্রতি ১০ মিনিট পর পর এখান থেকে সাদুল্লাপুরের উদ্দেশ্যে নৌকা ছাড়ে।চাইলে স্পিডবোট, কোষা নৌকা, শ্যালো নৌকা চুক্তিতে ভাড়া নিয়েও সাদুল্লাপুরে পৌছনো যায়। সে ক্ষেত্রে স্পিডবোট এর ভাড়া পড়বে ৫০০ টাকা, কোষা নৌকার ভাড়া পড়বে ৩০০ টাকা, শ্যালো নৌকার ভাড়া পড়বে ২৫০ টাকা। তবে হ্য এখানে যে দিয়াবাড়ীর কথা বলা হয়েছে সেটা আসলে উত্তরার দিয়াবাড়ী নয়।
৪. সাভার থেকে গোলাপ গ্রাম:
সাভর থেকে গোলাপ গ্রাম যেতে চাইলে সাভার চৌরংগী মাকের্টের সামনে থেকে লেগুনা অথবা মিনি বাসে করে আরকান বাজার পৌছাতে হবে। এছাড়াও নবীনগর, জিরাবো, সাভার থেকে আলিফ পরিবহন বা মোহনা পরিবহনে করে বিরুলিয়া ব্রিজে পৌছানো যায়। এরপর বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে আরকান বাজার আর আরকান বাজার থেকে অটোতে সাদুল্লাপুর গোলাপগ্রাম।